ভূমি অফিস জুড়ে দালালের দৌড়াত্ব
ব.ম শামীম: মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী এ্যাসিল্যান্ড অফিসের রমরমা ভূমি নামজারী বানিজ্য চলছে। এক সময়ের হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ এ অঞ্চলের জমিগুলো রেকর্ডে হিন্দুদের নাম থাকায় বর্তমানে ভোগ দখলীয় অনেকেই নামজারী করে জামিগুলো নিজ নামে রেকর্ড করাতে পারেননি। বিগত সরকার এ জমিগুলোকে “ক” তফসিল ও “খ” তফসিল দুটি ভাগে ভাগ করে। “খ” তফসিলভূক্ত জমিগুলোকে এ্যাসিল্যান্ড অফিসে নামজারী করার নির্দেশ দিলে শুরু হয় টঙ্গীবাড়ী এ্যাসিল্যান্ড অফিসের রমরমা ভূমি নামজারী বানিজ্য।
উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে প্রায় অর্ধশতাধিক দালাল তহসিলদারদের যোগসাজেসে ভূমি নামজারীর নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সরোজমিনে, আড়িয়ল বাজার ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা যায়, তহসিলদার আবুল হাসেম এর সামনের চেয়ারে বসে আছে ভূমি দালাল আক্তার হোসেন। লোকজন কাজের জন্য আসলেই কখনো তহসিলদারের সামনে কখনোবা ভূমি অফিসের বারেন্দায় ডেকে নিয়ে রফাদফা করা হচ্ছে। নামজারীর কথা বলে জনগনের কাছ হতে লক্ষ লক্ষ টাকা আর ফাইলপত্র হাতিয়ে নিলেও “খ” তফসিলভূক্ত হাতে গুনা কয়েকটি জমির নামজারী করে দিয়েছেন আড়িয়ল ভূমি অফিস।
উপজেলার পাঁচগাওঁ গ্রামের আ. রউফ জানান, আমি টঙ্গীবাড়ী এসিল্যান্ড অফিসে ২৩ শতাংশ জমি নামজারী করতে গেলে আমার নিকট হতে একলক্ষ টাকা চায় এসিল্যান্ড অফিসের লোকজন। ভূক্তভোগী লোকজনের কাগজপত্র ঠিক থাকলেও একটু খুদ বের করে ১২টি ভূমি অফিসের তহসিলদার, সার্ভেয়ার নজরুল. কাননগো অফিসার এবং এ্যাসিল্যান্ডের যোগসাজেসে ভূমি নামজারী বানিজ্যে অসহায় হয়ে পড়েছে এ এলাকার লোকজন।
ভুক্তভোগীরা জানান, কাগজে খুদ না থাকলেও নামজারীর জন্য প্রতি শতাংশে ১ হাজার করে টাকা দাবী করেন ভূমি অফিসের লোকজন। এছাড়া এ্যাসিল্যান্ড অফিসের যোগসাজেসে উপজেলার বালিগাঁও-তালতলা খালে একাধিক ড্রেজার বসিয়ে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে বালূ উত্তোলন, পাচঁগাঁও বাজার সংগ্লগ্ন সরকারী খাল ভরাট করে দোকনঘর নির্মান, ভাংগনিয়া সরকারী খাল হতে বালু কর্তন, হাসাইল পদ্মা নদী হতে বালু উত্তোলন চলছে।
টঙ্গীবাড়ী সহকারী কমিশনার ভূমি রাহেলা রহমতুল্লাহ প্রায় ২২ লক্ষ্য টাকা দামী গাড়িতে চড়ে অফিস করেন। গাড়ির সামনে পিছনে বড় করে লেখা রয়েছে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট। নাম প্রকাশে অনই্চ্ছুক এলাকার কতিপয় ব্যাক্তিবর্গ জানান, নামজারী বানিজ্য ও বালী বিক্রি বানিজ্যের বিরুদ্ধে কেউ যাতে প্রাতিবাদ করতে সাহস না পায় জনগনের মনে ভীতি সঞ্চার করতেই সে গাড়ির সামনে পিছঁনে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট লেখে চলাফেরা করেন।
এ্যাসিল্যান্ডের নামজারী বানিজ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে আউটশাহী ভূমি অফিসের সহকারী তহসিলদার মোখলেছুর রহমান জানান, স্যার তার নিজ এলাকা চাঁদপুরের হাজিগঞ্জে একটি ট্রাস্ট খুলেছেন ট্রাষ্ট চালানোর জন্য কিছু টাকা নেন।
এ ব্যাপারে এ্যাসিল্যান্ড রাহেলা রহমতুল্লাহ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে সে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের কথা আস্বীকার করেন। এ পর্যন্ত “খ” তফসিলভূক্ত কতগুলো জমির নামজারী করা হয়েছে জানতে চাইলে সে জানায়, আমি অফিসে নেই মালয়শিয়া যাচ্ছি। ১০ দিনের ছুটি নিয়েছি।
১.এসিল্যান্ডের দামি গাড়ি। ২. পাঁচগাঁও গ্রামে সরকারী খাল ভরাট করে দোকানঘর নির্মান। ৩. বালিগাওঁ তালতলা খালে বালু উত্তোলনের দৃশ্য। ৪ ও ৫. বালিগাওঁ তালতলা খালে মাটি কাটার প্রস্তুতি চলছে।
Leave a Reply