মুন্সীগঞ্জে নাট্যচর্চা – আলমগীর মাহমুদ

মুন্সীগঞ্জ শহর কেন্দ্রীক নাটচর্চা শুরু হয়েছিলো অনেক আগেই। স্বাধীনতার পূর্বে মুন্সীগঞ্জের যে সকল মঞ্চে নাটক মঞ্চায়নের তথ্য পাওয়া যায় তার মধ্যে জগধাত্রী পাড়ার নাট মন্দির, হরগঙ্গা কলেজের আশুতোষ হল ও দর্পণা সিনেমা হল অন্যতম। স্বাধীনতার পূববর্তী সময়ে যে কটি নাটক মঞ্চায়নের তথ্য পাওয়া যায় তা হচ্ছে ১৯৫৩ সালে মঞ্চায়িত হয় নাটক ‘মিশর কুমারী’ ১৯৫৪ সালে মঞ্চায়িত হয় ‘হায়দার আলী’ ১৯৫৫ সালে মঞ্চায়িত হয় ‘মহারাজ নন্দকুমার’ ও ‘রমা’ ১৯৫৬ সালে মঞ্চায়িত হয় ‘কেরানী জীবন’, ১৯৫৭ সালে মঞ্চায়িত হয় ‘টিপু সুলতান’ এছাড়া আশুতোষ হলে ১৯৬৭ সালের মার্চ মাসে ‘এক পেয়ালা কফি’ এবং পরবর্তীতে ‘টিপু সুলতান’ মঞ্চায়নের তথ্য পাওয়া যায়। ১৯৫৮ সালে মঞ্চায়িত হয় ‘স্বপ্ন’ এবং ‘পোড়াবাড়ি’, ১৯৬০ সালে মঞ্চায়িত হয় ‘উল্কা’ এবং ‘ক্ষুধা’। ১৯৬২ সালে মঞ্চায়িত হয় ‘ঘুর্নিবায়ু’ এবং ‘পাকা রাস্তা’ ১৯৬৩ সালে মঞ্চায়িত হয় ‘মহুয়া’। ১৯৬৪ সালে মঞ্চায়িত হয় বিশুর বিয়ে নাটক মঞ্চায়নের তথ্য পাওয়া যায়। ১৯৬৮-৬৯ সালে জনান্তিক নামে একটি নাটকের দল কাজ শুরু করে এবং ১৯৬৮ সালে দর্পণা সিনেমা হলে শম্ভু মিত্রের ‘কাঞ্চন মালা’ নাটকটি মঞ্চায়ন করে। এছাড়া ১৯৬৯ সালে ‘যোগে ভুল’ নাটকটি মঞ্চায়নের তথ্য পাওয়া যায়। উপরের তথ্যানুসারে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে কোন নাটক কোন দল মঞ্চায়ন করেছে তার কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

মুন্সীগঞ্জের নাট্যচর্চা শহর কেন্দ্রীক হলেও শহরের বাইরেও নাটক মঞ্চায়নের তথ্য পাওয়া যায়। ১৮৭৩ সালে বজ্রযোগিনীতে মঞ্চায়িত হয় ‘সতি হরণ’ এবং ১৯৫৭ সালে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং-এ মঞ্চায়িত সামাজিক নাটক ‘বোবা মানুষ’ । এছাড়া যে সকল অঞ্চলে নাটক মঞ্চায়নের তথ্য পাওয়া যায় তা হলো হাঁসাড়া, কালীপাড়া, পাওলদিয়া, শ্রীনগর ইত্যাদি।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে গ্রুপ থিয়েটার চর্চা শুরু হলেও বেশ কয়েকটি দল বিচ্ছিন্ন ভাবে নাটক মঞ্চায়ন করতো। জমিদার পাড়ার সুপ্ত অগ্নি নাট্যগোষ্ঠী কাজী সামছুজ্জোহা বাদলের রচনা ও পরিচালনায় ১৯৭৩ সালে মঞ্চস্থ্য করে ‘মন নয় মেঘ’, অশিক্ষিত নাট্যগেষ্ঠী ১৯৭৩ সালে মঞ্চায়ন করে ‘রক্তের বিনিময়ে’। এছাড়া জমিদার পাড়ার নব কনিকা ক্লাব ছবিঘর সিনেমা হলে ১৯৭৪ সালে রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটক মঞ্চায়ন করে। নাটকটি পরিচালনা করেছিলেন মাহবুবুল আলম। বলা যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই নাটকটি স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মুন্সীগঞ্জে মঞ্চায়িত রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের প্রথম নাটক। নাটকটিতে অভিনয় করেছিলেন মিজানুর রহমান মিজান, লাকী, দেলোয়ার হোসেন, মোবারক হোসেন পরান, মানকি এবং টেলিভিশন অভিনেতা ও পরিচালক আল মনসুর।

এছাড়া ঐ সময়ে আরো কয়েকটি দল থেকে নাটক মঞ্চায়নের তথ্য পাওয়া যায়। ১৯৭৪-৯৫ সালের দিকে গণকপাড়ার মিলন ক্লাব ‘এজিদ বদ জয়নাল উদ্ধার’ নাটকটি মঞ্চায়ন করে। কারবালার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রচিত এ নাটকে ঐ সময়ে অভিনয় করেছিলেন গাজী রহমান, মোশারফ হোসেন, শহীদ মিলন প্রমুখ। কোঁর্টগাঁও বয়েজ ক্লাব থেকে প্রয়াত নাট্যকার মজনু সরকারের কিছু নাটক মঞ্চায়নের (৭৪-৭৫) তথ্য পাওয়া যায়।

স্বাধীনাত পরবর্তী সময়ে যুদ্ধ থেকে ফিরে আসা তরুণরা সংস্কৃতি চর্চা তথা নাট্য চর্চায় উদ্যোগি হয় বেশী। ফলে বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের জন্ম হয় তৎপরবর্তী সময়ে। স্বাধীনতার পর মালপাড়াস্থ্য গণসদন মিলনায়তনকে ঘিরে নাট্যচর্চা বেগবান হয়ে উঠে। গণসদন হল নির্মাণাধীন অবস্থায় ১৯৭৯ সালে আর্ট কাউন্সিলের উদ্যোগে কল্যাণ মিত্রের ‘পাথর বাড়ী’ নাটকটি মঞ্চায়িত করে। নাকটি পরিচালনা করেছিলেন জিতেন মোক্তার। ২৫/০৭/১৯৭৯ সালে গণসদন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে সেখানে নিয়মিত নাটক মঞ্চায়ন হতো। মূলত মুন্সীগঞ্জ শহরের নাট্যচর্চা ছিল গণসদন কেন্দ্রীক। এছাড়া হরেন্দ্রলাল পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে নাটক মঞ্চায়নের তথ্য পাওয়া যায়। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা আইনজীবি সমিতি বার কাউন্সিল মিলনায়তন, সদর উপজেলা মিলনায়তন এবং মুন্সীগঞ্জ বুহুমুখী উচ্চ বিদ্যাল সংলগ্ন মিলনায়তনে নাটক মঞ্চায়ন হতো। পরবর্তীতে গণসদনকে ঘিরেই নাট্যচর্চা চলতে থাকে। সংস্কারের অভাবে গণসদন মিলনায়তন ধ্বংশের শেষ প্রান্তে পৌঁছলে নাট্যচর্চার গতি অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়ে। ২০০৭ সালে জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তন প্রতিষ্ঠত হলে সেখানেই এখন মূলত নিয়মিত নাটক মঞ্চায়ন হচ্ছে। স্বাধীনাতোত্তর গ্রুপ থিয়েটার চর্চায় বিশ্বাসী হয়ে প্রবাহ নাট্যগোষ্ঠী, অনিয়মিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী নাট্যচর্চা শুরু করলেও পরবর্তী সময়ে মুন্সীগঞ্জ থিয়েটার, থিয়েটার সার্কেল, সঞ্চালক নাট্যচর্চা কেন্দ্র এখন নিয়মিত নাটক মঞ্চায়ন করছে। এছাড়া গ্রুপ থিয়েটার চর্চার বাইরে সৌখিন নাট্যচক্র, নাট্যবিন্দু, ঘাসফুল নদী সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী, উদীচী মুন্সীগঞ্জ জেলা সংসদ নাটক মঞ্চায়নে ব্রত হয়।

স্বাধীনতার এক বছরের মধ্যেই প্রবাহ নাট্যগোষ্ঠী নাট্যচর্চা শুরু করে। মূলত প্রবাহ নাট্যগোষ্ঠীর নাট্যচর্চার মাধ্যমে গ্রুপ থিয়েটার চর্চা শুরু হয় মুন্সীগঞ্জে। ১৯৭২ সালে প্রবাহ নাট্যগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরবর্তী সময়ে গতানুগতিক পথ পরিহার কওে বিচিত্রধর্মী নাটক মঞ্চায়নে সক্রিয ছিল বেশী। মুন্সীগঞ্জে বসে ঢাকার অন্যান্য নাট্যদলগুলোর সমমানের নাটক মঞ্চায়ন এবং নাটকে আধুনিক প্রয়োগ কৌশল ও আলোক প্রক্ষেপনে আধুনিক টেকনিকের ব্যবহার ছিল উল্লেখ করার মতো। যার এই দলের উল্লেখযোগ্য প্রযোজনার মধ্যে সফোক্লিসের ‘রাজা ইডিপাস’, ¯প্রীংস, রক্ত করবী (২২/১১/১৯৭৯) এর মত নাটক বেরিয়ে এসেছে। এছাড়া ‘কিন্তু নাটক নয়’ ‘সাগর প্রাণ’ ‘সুবচন নির্বাসনে’, ‘হারাধনের দশটি ছেলে’ ‘আগন্তুক’ ‘কবর’ ‘বক্ষজোড়া মাটি’ ‘প্রজাপতির লিলালাস্য’ ‘ফলাফল নিম্নচাপ’ ‘স্পার্টাকাস বিষয়ক জটিলতা’ ‘এখন দু:সময়’ ছিল উল্লেখযোগ্য এবং মঞ্চ সফল প্রযোজনা। প্রবাহ নাট্যগোষ্ঠী বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী আয়োজিত প্রথম জাতীয় নাট্য উৎসবে ১২/০২/১৯৭৭ তারিখে ‘¯িপ্রংস’ এবং দ্বিতীয় জাতীয় নাট্য উৎসবে ১৮/০১/১৯৭৮ তারিখে ‘রাজা ঈদিপাস’ নাটক দুটি মঞ্চায়ন করে। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ শিল্পী সংসদ এবং ১৯৭৫ সালে ময়মনসিংহ আর্ট কাউন্সিল আয়োজিত নাট্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে প্রবাহ। ১৯৭৮-৮০ সালে ২২ নভেম্বও,১৯৭৯ হতে শুরু হওয়া বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী ও বাংলাদেশ গ্র“প থিয়েটার ফেডারেশান আয়োজিত তৃতীয় জাতীয় নাট্য উৎসবে বিভাগীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করে রবীন্দ্র নাটথ ঠাকুরের ‘রক্তকরবী’ নাটক মঞ্চায়ন করে ঢাকা বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অজংন করে প্রবাহ। প্রবাহ নাট্য গোষ্ঠী মোট ১৩ নাটকের ৬৯ টি প্রদর্শনী করতে সমর্থ হয়েছিল। প্রবাহ নাট্য গোষ্ঠী বাংলাদেশ গ্র“প থিয়েটার ফেডারেশানের প্রতিষ্ঠাকালিন সদস্য। দীর্ঘদিন কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর প্রবাহ নাট্য গোষ্ঠী ১৯৯৭ সালে পুনরায় কার্যক্রম শুরু করে কয়েকটি নাটক মঞ্চায়ন করেছে। এর মধ্যে ‘পুতুল বিয়ে’ এবং ‘নারি’ নাটক দুটো অন্যতম। তাদের আমন্ত্রণ ত্রিপুরা রাজ্যের নাট্য নাট্যভূমি পরপর দুদিন ‘আরোহন’ নাটকটি মঞ্চায়ন করে গণ সদন হলে ২০০০ সালের মার্চ মাসে। পরবর্তীতে নাট্যভূমির আমন্ত্রণে প্রবাহ নাট্যগোষ্ঠী ত্রিপুরা রাজ্যে দুটি নাটক মঞ্চায়ন করে ২০০১ সালে। উল্লেখ্য স্বাধীনতার পর ত্রিপুরার ‘নাট্যভূমি’ একমাত্র বিদেশী দল যারা প্রবাহ নাট্য গোষ্ঠীর আমন্ত্রণে মুন্সীগঞ্জে নাটক মঞ্চায়ন করে।

১৯৭৩ সালের ২১ শে ফেব্র“য়ারি ‘আগামী ২১ শে আমরা যুদ্ধ ঘোষণা করবো” মঞ্চায়নের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ কওে অনিয়মিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী। বাংলাদেশ গ্র“প থিয়েটার ফেডারেশানের সদস্যভুক্ত এই দল টি এ পর্যন্ত ৫৪ টি নাটকের ২৭০ টি প্রদর্শনী করতে সমর্থ হয়েছে। অনিয়মিত মুন্সীগঞ্জের একমাত্র দল যারা অর্ধশত নাটক মঞ্চায়নের গৌরব অর্জন করেছে। অনিয়মিত এর সর্বাধিক মঞ্চায়িত নাটক ‘নো ভ্যাকেন্সী’। অনিয়মিত ১৯৯৭ সালে পরিবেশ থিয়েটারের সাথে মুন্সীগঞ্জ বাসীকে প্রথম পরিচয় করিয়ে দেয়। তরুণ নাট্যকার ও নির্দেশক জনাব আশিষ খন্দকার দীর্ঘ তিন মাস অক্লান্ত পরিশ্রম কওে বিক্রমপুরের ৪০০ বছরের ইতিহাস সমৃদ্ধ নাটক ‘সেই সমতটে, এই জনপদে” মঞ্চস্থ্য করে। ১৩০ জন শিল্পী নিয়ে বিশাল ক্যানভাসে নাটকটি মঞ্চস্থ হয় ইদ্রাকপুর কেল্লায় ৭,৮ ও ৯ নভেম্বর,১৯৯৭ সালে। নাটকের ব্যাপ্তিকাল ছিল তিন ঘন্টা। ১৯৭৮-৮০ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী আয়োজিত তৃতীয় জাতীয় নাট্য উৎসবে ঢাকা জেলা পর্যায়ে অনিয়মিত অগ্নিদূত এর ‘হ-য-ব-র-ল’ নাটকটি নিয়ে অংশগ্রহণ করে এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করে। অনিয়মিত এর প্রযোজনাগুলো হচ্ছে আগামী একুশে আমরা যুদ্ধ ঘোষণা করবো (১৯৭৩), বিয়ে (১৯৮৩), হ-য-ব-র-ল (১৯৭৯), নুরুলদিনের সারা জীবন (১৯৮০), কবর (১৯৮২), চুপ সত্যি বলছি (১৯৮৪), নো ভ্যাকেন্সী (১৯৮৬), পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায় (১৯৯৫), নীলা (১৯৯৭), বাসন (১৯৯৯), ইতিহাস কাঁদে (১৯৯৫), সেই সমতটে, এই জনপদে (১৯৯৭), এখনো দু:সময় (১৯৯৮), খেলা খেলা (২০০১), ইবলিস (২০০৩), বট বৃক্ষের ধরম করম (২০০৪), সুখ দৈত্ত (২০০৪), ইয়াসমিন ট্র্যাজেডি (১৯৯৫), ভন্ডামী (১৯৯৩), নির্বাচন ট্যাজেডি (১৯৮৩), রাজার কুকুর হইতে সাবধান (১৯৯৫). সুবচন নির্বাসনে (২০০৯), বাংলার বাদশা, হৃদয়ে একুশ, ফলাফল নিম্নচাপ, দেবতাদের ভয়, চারিদিকে বেরিকেড, গিরিগিটি, ২১ আমার ২১, আগে গেলে বাঘে খায়, কাল বিহঙ্গ, এ কোন বেসাদ, কিংশুক যে মেরুতে, সংবাদ কার্টুন, প্রতিদিন দু:স্বপ্ন, স্পাটাকার্স বিষয়ক জটিলতা, সম্ভগামী, রাজার হল সাজা, আত্ম ভোলা শিল্পী, বাবা বদল, স্বাধীনতা আমার, বাসন ইত্যাদি। ২০০৩ সালের মার্চ মাসে আয়োজন করে তিনদিন ব্যাপী নাট্য উৎসব, ২০০৮ সালে (১-৫ ফেব্র“য়ারি) আয়োজন পাঁচ দিন ব্যাপী নাট্য উৎসব এবং ২০০৯ সালে (৬-১২ ফেব্র“য়ারি) আয়োজন করে সপ্তাহব্যাপী নাট্য উৎসবের।

অনিয়মিত বড়দের পাশাপাশি শিশু নাট্যচর্চার উপরও জোর দেয় এবং গঠন করে অনিয়মিত লিটল ইউনিট। যার ফলে ১৯৯৫ সালের ১৬-২৩ মার্চ পর্যন্ত পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশন আয়োজিত প্রথম জাতীয় শিশু-কিশোর নাট্য উৎসবে মুন্সীগঞ্জের একমাত্র দল হিসাবে অংশগ্রহণ করে। পিপলস থিয়েটার আয়োজিত পরবর্তী উৎসবগুলোতে অনিয়মিত অংশগ্রহণ করে। লিটল ইউনিটের উল্লেখযোগ্য প্রযোজনা হচ্ছে টোকাই এবং টোকাই (১৯৮৮), কাঠের ঘোড়া (১৯৮৬), কেরামতের কেরামতি (১৯৮৭), হীরক রাজার দেশে (১৯৮৮), বিচ্ছু বাহিনীর কান্ড (১৯৯০), অপরূপ একটি দেশে (২০০৮), চলতে চলতে কথা বলতে বলতে, সুন্দও পৃথিবী গড়ি, অন্য রকম অভিযান এবং প্রকৃতি কান্না (১৯.০৭.০৯), রাজার পালা (২০১১)। এর মধ্যে হীর রাজার দেশে এবং অপরূপ একটি দেশে নাটক দুটি বাংলাদেশ টেলিভিশনের কিশোর মঞ্চে প্রচারিত হয়। অনিয়মিত ২০০৮ সালে মার্চ মাসে আয়োজন করে তিন দিন ব্যাপী শিশু নাট্য উৎসবের।

১৯৭৪ সালে গড়ে উঠে বিক্রমপুর শিল্পী গোষ্ঠী। এই দলের অন্যতম প্রযোজনা ম্যা´িম গোর্কিও ‘মা’ (১৯৭৫)। মা নাটকটি মুন্সীগঞ্জের নাট্যাঙ্গণের একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ নাটক হিসাবে বিবেচিত। নাটকটি রূপান্তও করেছিলেন মুন্সীগঞ্জের বিশিষ্ট সাংবাদিক ও নাট্যকার জনাব মোজাম্মেল হোসেন মন্টু এবং পরিচালনা করেছিলেন এডভোকেট বাদল।

১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সৌখিন নাট্যচক্র। ১৯৭৬ সালে জেলা শিল্পকলা একাডেমী আয়োজিত নাট্য উৎসবে কাজী জাকির হাসানের ‘জনৈকের মহাপ্রয়াণ’ নাটক মঞ্চায়নের মাধ্যমে সৌখিন নাট্য চক্রের যাত্রা শুরু। ১৯৭৮ সালে সৌখিন নাট্যচক্র আভ্যন্তরীণ নাট্য উৎসবের আয়োজন করে মুন্সীগঞ্জের নাট্য চর্চায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। চারদিন ব্যাপী এই উৎসবে সৌখিন নাট্যচক্রের পূর্বেও মঞ্চায়িত নাটক অরুন কুমার দে‘র ‘বেকার’, কিরন মৈত্রের ‘বার ঘন্ট’ কাজী জাকির হাসানের ‘প্রেক্ষিত শাহজাহান ও একাল’ এবং জনৈকের ‘মহা প্রয়ান’ মঞ্চস্থ্য হয়। ৮৩ সালে সৌখিন মঞ্চস্থ্য কওে মামুনুর রশীদেও ‘ওরা কদম আলী’। বলা চলে ‘ওরা কদম আলী’ সৌখিনের অত্যন্ত মঞ্চ সফল একটি নাটক। নাটকটি বিভিন্নক্ষেত্রে ৫ টি পুরস্কার লাভ করে। এছাড়া সৌখিন নাট্যচক্রের নাটকগুলোর মধ্যে ড: ধনঞ্জয় বৈরাগির ‘এক পেয়ালা কফি’ মজনু সরকারের ’এক নদী রক্ত’, রাধা রমন ঘোষের ‘নতুন মানুষ উল্লেখ্যযোগ্য। মাঝে কিছুদিন বিরতি দিয়ে সৌখিন পুনরায় নাট্যচর্চা শুরু করে। ২০১১ সালে ‘ওরা কদম আলী’ পুন মঞ্চায়নসহ ‘প্রত্যাশিত সংলাপ (২৫/১১/২০০৯) নাকটি মঞ্চে এনেছে। এখানে উল্লেখ্য যে, বিক্রমপুর শিল্পী গোষ্ঠী এবং সৌখিন নাট্যচক্র ১৯৭৭-৭৮ সালে যৌথভাবে বিজুর বিয়ে/বৌদিও বিয়ে নাটকটি মঞ্চায়ন করে। যার পরিচালক ছিলেন প্রয়াত আব্দুল খালেক মোল্লা।

১৯৭৬ ও ১৯৮২ সালে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর উদ্যোগে মুন্সীগঞ্জের প্রথম নাট্য উৎসবের আয়োজন করা হয়। উৎসবে মুন্সীগঞ্জের প্রবাহ নাট্যগোষ্ঠী, অনিয়মিত, সৌখিন নাট্যচক্র, ঘাসফুল নদী অংশগ্রহণ করে। ১৯৯১ সালে জেলা শিল্পকলা একাডেমী সপ্তাহব্যাপী নাট্য কর্মশালার আয়োজন করে। পরবর্তী সময়ে জেলা শিল্পকলা একাডেমী আরো কয়েকটি নাট্য কর্মশালার আয়োজন করেছিলো। বর্তমানে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর নাট্যকলা বিভাগ চালু রয়েছে। যেখানে ইতোমধ্যে মঞ্চে এসেছে ‘১৯৭১’ (২০০৯) ‘সিডর’ (২০১১) এবং ‘একাত্তরের যুদ্ধগাঁথা (২০১২ রচনা রুমা মোদক, নির্দেশনা মো: আক্তারুজ্জামান)’। এর মধ্যে একাত্তরের যুদ্ধগাঁথা নাটকটি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর মুক্তিযুদ্ধের নাটক নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় প্রযোজনা ভিত্তিক নাট্যকর্মশালার মাধ্যমে তৈরী। এছাড়া জেলা শিল্পকলা একাডেমী ২১-২৮ ফেব্রুয়ারি,২০১১ পর্যন্ত একুশে নাট্য উৎসবের এবং ১৬-১৮ ডিসেম্বর,২০১৩ পর্যন্ত আয়োজন করে বিজয় নাট্য উৎসবের। যেখানে মুন্সীগঞ্জের নিয়মিত দলগুলোসহ থানা পর্যায়ের বেশ কয়েকটি নাটক মঞ্চায়ন করে।

সরকারী হরগঙ্গা কলেজ এর আশুতোষ হলে বেশ কয়েকটি নাটক মঞ্চায়নের তথ্য পাওয়া যায় যেগুলো ছিল কলেজের নিজস্ব প্রযোজনা, তার মধ্যে ‘হায়েনার আর্শিতে (১৯৯৩)’ রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের ‘মুক্তির বিয়ে (২০১০) ইত্যাদি অন্যতম।

১৯৯১ সালে মুন্সীগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চল বালিগাঁও-এ নাট্যবিন্দু নামে একটি নাট্য সংগঠন কাজ শুরু করে। নাট্যবিন্দু ১৯৯৬ ও ১৯৯৭ সালে দুটি নাট্য উৎসবের এবং ২০০৩ সালে পথ নাটক উৎসবের আয়োজন করে। নাট্যবিন্দুর প্রযোজনারগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘যে গাঁয়ে সবাই অন্ধ (১৯৯০)’ স্বাধীনতা সংগ্রাম (১৯৯১), ভন্ডামী (১৯৯৩), বর্ণচোরা (১৯৯২), রাজাকারের মুক্তিযোদ্ধা জামাই (১৯৯৫), ফুলের গন্ধে ঘুম আসেনা (২০০৩), বিবর্তন (২০০৭), আকাশ ছোঁয়া স্নেহ মায়া (২০১০)।

১৯৯১ সালে জেলা শিল্পকলা একাডেমী যে কর্মশালার আয়োজন করেছিলো সেখান থেকে প্রশিক্ষণ নেয়া কয়েকজন তরুণ ১৯৯২ সালের ৮ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠা করে মুন্সীগঞ্জ জুনিয়র থিয়েটার। পরবর্তীতে নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘মুন্সীগঞ্জ থিয়েটার’। প্রতিষ্ঠার পর থেকে নানা প্রতিকুলতার মাঝে এ পর্যন্ত ২১ টি নাটকের ১০৮ টি প্রদর্শনী করতে সমর্থ হয়েছে। নাটক মঞ্চায়নের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি নাট্য কর্মশালার আয়োজন করেছে মুন্সীগঞ্জ থিয়েটার। মুন্সীগঞ্জ থিয়েটার সর্ব প্রথম ঢাকার প্রতিষ্ঠিত দলগুলোকে নিয়ে ১৯৯৮ সালের (১২-১৯ মার্চ,১৯৯৮) সপ্তাহব্যাপী এবং ১৯৯৯ সালে দুই দিন ব্যাপী এবং ২০০০ সালে আয়োজন কওে পাঁচদিন ব্যাপী নাট্য উৎসবের। এছাড়া ঢাকা বিভাগীয় নাট্য উৎসব,২০০৩ এ ‘মুচির আশ্চর্য বৌ’ এবং বাংলাদেশ গ্র“প থিয়েটার ফেডারেশানের ঢাকায় ঢাকার বাইওে নাটক মঞ্চায়ন কার্যক্রমের আওতায় যথাক্রমে ‘চরণ দাস চোর’ এবং ‘মুচির আশ্চর্য বৌ’ নাটক দুটি মঞ্চায়ন করে। পাশাপামি আন্তজৃাতিক থিয়েটার ইনস্টিটিউট আয়োজিত আন্তর্জাতিক নাট্য উৎসব,২০০১ এর পথ নাটক পর্যায়ে পথনাটক ‘পার্ক’ মঞ্চায়ন করে। উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে ‘ওরা আজো কাঁদে (০২/০৩/১৯৯২), বুড়ো শালিকের ঘারে রোঁ (১৯৯৩), ১৯৭১ (১২/০৮/১৯৯৩), নৃপতি (১২/০৪/১৯৯৪), মেরাজ ফকিরের মা (১২/০১/১৯৯৭), মানুষ এবং (১৯৯৭), চরণ দাস চোর (১৯৯৯), মুচির আশ্চর্য বৌ (৩১/০৩/২০০২), মহুয়া (১৪/০৪/২০০২), গায়েন্দার বার বছর (১৯৯২), কুয়াশা মুক্ত স্বপ্ন (১৯৯৮), পরিচ্ছন্নতা (১৯৯৮), রাজা ও শ্রমিক (১৯৯৩), অন্ধকুপ (১৬/১২/১৯৯৪), কথাডা কি হাছানি (১৯৯৩), বৌ (০১/০২/১৯৯৯), আদাব (১৯৯৫), পার্ক (৩১/০১/২০০০), মহা প্রলয় (৩১/০৩/২০০১), খুন (০১/০২/২০০৩), মেলা (০৫/০৩/২০০৪), সুনাই কইন্যার পালা (২৭/০২/২০১১), মুক্তির জননী (২০০৮) ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ২০০৩ সালে আগস্ট মাসে ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শিশু উৎসবে মুন্সীগঞ্জ থিয়েটার অংশগ্রহণ কওে এবং ‘কচি পাতার কান্না’ নাটকটি মঞ্চায়ন করে।

মুন্সীগঞ্জ থিয়েটার বড়দের পাশাপাশি শিশুদ দল ‘শিশু তীর্থ’ গঠন করেছে। এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি নাটক মঞ্চে এনেছে। যার মধ্যে ‘রাজপুত্রের অভিযান (১৪/০১/২০০০), কচি পাতার কান্না (০৪/০১/২০০২), কাক ও কোকিল (২৬/০৩/২০০১), বাঁশি ০৭/০৩/২০০৩), অরণ্যের ভেতরে অরণ্য (২০০৯) ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়া স্থানীয় কালাচারাল কমপ্লেক্স ভবনে আয়োজন করে দিনব্যাপী শিশু নাট্যমেলার (২০০০)। ‘রাজপুত্রের অভিযান’ ১২/১১/১৯৯৯ এবং চরণ দাস চোর ২০/১০/১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত হয়।

২০০২ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শাস্তি নাটক মঞ্চায়নের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে নাট্যমেলা। স্থানীয় গণসদন হলে ১৩/০২/২০০২ সালে নাটকটির প্রথম প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। মুন্সীগঞ্জ এবং ঢাকা মিলিয়ে নাটকটির মোট ০৫ টি প্রদর্শনী হয়।

১৯৯৭ সালে মুন্সীগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চল কেওয়ারে প্রতিষ্ঠিত হয় অগ্রগামী নাট্যগোষ্ঠী। এ পর্যন্ত ১৭ টি নাটক মঞ্চস্থ্য করেছে। অংশগ্রহণ করেছে জাতীয় শিশু-কিশোর নাট উৎসবে। প্রায় প্রতি বছরই অগ্রগামী স্থানীয়ভাবে পথনাটক উৎসব ও সংস্কৃতি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে স্থানীয় ভাবে যুব সমাজকে উদ্বুদ্ধ করতে ভূমিকা রেখেছে। তাছাড়া স্থানীয় ভাবে শিশু নাট্যকর্মশালার আয়োজন করে অবহেলিত শিশুদের উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। সম্মাননা প্রদান করেছে অভিনেতা ‘শমী কায়ছার’ নাট্যকার ‘অনল রায়হান’ এবং কথা সাহিত্যিক ‘ইমদাদুল হক মিলন’-কে। উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে পদ্মা পাড়ের জীবন, অল টিং টট (২০১০), একাত্তরের সেই দিন, যৌতুক নিয়ে কৌতুক (২০০৮), পাপ না পুন্য (২০০৯), এখানো আকাশে অনেক মেঘ (২০১০। একই এলাকায় অঙ্কুর নাট্যগোষ্ঠী নামে আরেকটি দল তাদের নাট্য কার্যক্রম শুরু করেছে।

সুস্থ্য সংস্কৃতির বিনোদনে ১৯৯৯ সালের ১৯ এপ্রিল থিয়েটার সার্কেলের যাত্রা শুরু। প্রথম প্রযোজনা হিসাবে মঞ্চে আনে মামুনুর রশীদের এখানে নোঙর (২০০০)। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর আয়োজনে ময়মনসিংহ-এ অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় তারা অংশগ্রহণ করে। ২০০১ ও ২০০২ সালে বাংলাদেশ শিল্পকরা একাডেমী আয়োজিত ঢাকার বাইরের নাট্যকারদেও লেখা নাটক নিয়ে সপ্তাহব্যাপী নাট্য প্রদর্শনীতে থিয়েটার সার্কেল ‘পদ্মাপারের কথকতা’ ও ‘দ্রোহে বসবাস’ নাটক দুটি মঞ্চায়ন করে। ২০০০ সালে থিয়েটার সার্কেলের আমন্ত্রণে সেন্টার ফর এশিয়ান থিয়েটার গণসদন হলে পরপর দুদিন নাটক মঞ্চায়ন করে (ভেলুয়া সুন্দরী ও রাজা)। বিগত বছরে বেশ কয়েকটি পথনাটক উৎসবের আয়োজন করে থিয়েটার সার্কেল। এছাড়া গত ৫-৭ মে,২০১৩ পর্যন্ত আয়োজন করে তিন ব্যাপী নাট্য উৎসবের। পাশাপাশি নিয়মিত চর্চা অব্যাহত রেখেছে ‘মুকাভিনয়ের’। উল্লেখযোগ্য প্রযোজনাগুলোর মধ্যে চোর (মুকাভিনয়-১৯৯৭), এখানে নোঙর (২০০০), পদ্মা পাড়ের কথকতা (২০০১), বুঁড়ো শালিকের ঘারে রো (২০০০), নিলামের বাজার (১৯৯৯), মধুমালা (২০০২), নকশী কাঁথার মাঠ (২০০১), জমিদার দর্পণ (২০০২), মানুষ এবং (২০০৪), পঞ্চভুতের রং তামাশা (২০০৪), দ্রোহে বসবাস (২০০৪), চৌরাস্তা (২০০৪), চায়ের দোকান (২০০৪), তেভাগা (২০০৬), অনুতপ্ত (মুকাভিনয়) (২০০১), নৃপতি (২০০৫), চেতনায় একুশ (মুকাভিনয়-২০০০), ভাঙ্গন (মুকাভিনয়-২০০৪), ১৯৭১ (২০০৬), স্বপ্নপুরি (মুকাভিনয়-২০০৩), অনির্বাণ (২০০৬), আটলারাকোপ (মুকাভিনয়-২০০৭), মুখোশ (২০০৫), সত্যের সন্ধানে (২০০০), পদ্মবীর (২০০১), কি হচ্ছে ? (মুকাভিনয়-২০০১), রঙ্গভঙ্গ (২০০৪), স্বাধীনতা (মুকাভিনয়-২০০১), ভোটের খপ্পরে (২০০১), একটু ভাবনা (মুকাভিনয়-২০০২), কি হোলা (মুকাভিনয়-২০০২), কুয়াশা মুক্ত স্বপ্ন (২০০০), মঞ্চকুড়ি (মুকাভিনয়-২০০২), হাসির বিয়ে (২০০২), আমচোর (মুকাভিনয়-২০০০), নবীন কিশোর (মুকাভিনয়-২০০২), শিক্ষায় স্যার সৈয়দ আহমেদ (১০/১২/২০১০), বাবা আদম ও বল্লাল রাজা (০২/০১/২০১০) ও রাক্ষুসী (২১/১০/২০১২)। ২০১১ সালে ডিসেম্বর মাসে ভারতের নয়া দিল্লীতে রায়ান ফাউন্ডেশন আয়োজিত শিশু উৎসবে থিয়েটার সার্কেল এবং থিয়েটার মুভমেন্ট, উড়িষ্যা আয়োজিত থিয়েটার ফেস্টিভ্যালে ২১ জানুয়ারি,১৪ কলা বিকাশ কেন্দ্রে মঞ্চায়ন করে মাইমোড্রামা ‘পাহাড়া’।

থিয়েটার সার্কেল শিশু নাটক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে দলের প্রতিষ্ঠাকালিন সময় থেকেই। মঞ্চে এনেছে বেশ কয়েকটি শিশু নাটক এবং অংশগ্রহণ করেছে জাতীয় শিশ-কিশোর নাট্য উৎসবে। মাগো ওরা বলে (২০০৮), রেলগাড়ি (২০০৯), কয়েকটি ফুল কিছু পাপড়ি (২০০০), ছিন্নমুকুল (২০০৪) পুস্পকানন (২০১০)। এর মধ্যে পুস্পকানন নাটকটি বাংলাদেশ টেলিভিশনের কিশোর মঞ্চে প্রচারিত হয়।

‘সত্য ও সুন্দরের চচায়’ গত ১৯/১০/২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত সঞ্চালক নাট্যচর্চা কেন্দ্র। প্রথম প্রযোজনা হিসাবে ১৮ জানুয়ারি,২০০৮ সালে মঞ্চে আনে ‘স্থাবর’ নাটকটি। এছাড়া গণসদন হলে দুদিন ব্যাপী আয়োজন করা হয় নাট্য প্রদর্শনীর যেখানে আতঙ্ক নাটকটি প্রদর্শিত হয় (৩১/১১/২০০৭ ও ০১/১২/২০০৭)। দেশীল সংস্কৃতি চর্চায় মঞ্চে এনেছে কিশোরগঞ্জের লোক কাহিনী ‘রাজুবালা সুন্দরী (১৩/০৪/২০০৮)’ ও কমলা সুন্দরীর পালা (০২/০৩/২০০৯)। যুব নাট্যচর্চায় যুব নাটক ‘পোটলা (১৫/০৮/২০০৮), ‘ভেংচা.কম (২৬/০৬/২০০৯), টুল (০৬/১১/২০১০) এবং দাবি (১১/১২/২০১০) মঞ্চে আনে। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মেও কাছে তুলে ধরতে প্রতি বছর শিল্পকলা একাডেমী প্রাঙ্গণে বিজয় দিবসে আয়োজন করা হয় মুক্তিযুদ্ধের আলোক চিত্র প্রদর্শনীর। ভাষা,২০০৮ দিবস উপলক্ষে স্থানীয় গণসদন হলে আয়োজন করে দুই দিন ব্যাপী শিশু নাট্য মেলার (২১-২২ ফেব্র“য়ারি,২০০৮)। ২৭ ফেব্র“য়ারি,২০০৯ হতে ০৬ মার্চ,২০০৯ পর্যন্ত আয়োজন করা ০৯ দিন ব্যাপী নাট্য উৎসবের। যেখানে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের নাট্যদল অংশগ্রহণ করে। এ উৎসবে সম্মাননা জানানো হয় মঞ্জ কুসুম বিশিষ্ট নাট্যজন ‘শিমুল ইউসুফ-কে’। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালায় ২৫-২৬ অক্টোবর,২০০৯ তারিখে আয়োজন দু‘দিন ব্যাপী নাট্য উৎসবের। মুন্সীগঞ্জের সর্ববৃহৎ নাট্যকর্মশালা (শিশু) আয়োজন কওে সঞ্চালক। যেখানে ১৫০ জন শিশু-কিশোর অংশগ্রহণ করে। গত ২৫-২৬ আগস্ট,২০০৮ তারিখে প্রেসিডেন্ট প্রফেসার ইয়াজউদ্দিন স্কুলে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশনের সার্বিক সহযোগিতায়। নাট্যাঙ্গণের খবর নিয়ে প্রকাশিত হয় ত্রৈ-মাসিক পত্রিকা নাট্যপত্র। এ পর্যন্ত মোট ০৬ টি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে। এ পর্যন্ত ০৫ টি মঞ্চ নাটকের ৪১ টি, ০৫ টি পথ নাটকের ৭২ টি প্রদর্শনী করেছে। নাটকগুলো হচ্ছে স্থাবর (১৭/০১/২০০৮), পাহারাদার (০২/০৩/২০০৯), রাজুবালা সুন্দরী (১৩/০৪/২০০৮), কমলা সুন্দরীর পালা (১৮/০২/২০১০), মুচির আশ্চর্য বৌ (০৪/১০/২০১১), আতঙ্ক (৩১/১১/২০০৭), পোটলা (২৫/০৮/২০০৮), ভেংচা.কম (২৬/০৭/২০০৯), টুল (০৬/১১/২০১০) ও দাবি (১১/১২/২০১১)।

সঞ্চালক নাট্যচর্চা কেন্দ্র ভারতের ভেরিলি (ইউপি) তে অল ইন্ডিয়ান কালাচারাল এসোসিয়েশন আয়োজিত ৫ম আন্তর্জাতিক থিয়েটার ফেস্টিভ্যালে ২৭ ও ২৯ জানুয়ারি,২০১০ তারিখে ‘খেলা’ ০১-০৫ অক্টোবর,২০১০ তারিখে ভারতের উড়িষ্যাতে অনুষ্ঠিত অল ইন্ডিয়া থিয়েটার অলিম্পিয়াড আয়োজিত আন্তর্জাতিক থিয়েটার অলিম্পিয়াডে ০৪ অক্টোবর, ২০১০ তারিখে রাজু বালা সুন্দরী, ০১-০৫.অক্টোবর,২০১১ তারিখে ভারতের উড়িষ্যাতে অনুষ্ঠিত ইন্ডিয়া থিয়েটার অলিম্পিয়াড আয়োজিত আন্তর্জাতিক থিয়েটার অলিম্পিয়াডে ০৪/১০/২০১১ তারিখে মুচির আশ্চর্য বৌ, ভারতের নয়াদিল্লীতে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পারফরর্মিক আর্টস আয়োজিত আন্তর্জাতিক শিশু থিয়েটার ফেস্টিভ্যাল, ২০১১ তে ১৪/১১/২০১১ ইং তারিখে লোক কলা কেন্দ্রে ‘বাঘের সাধ’ এবং ভারতের নয়া দিল্লীতে ইন্ডিয়ান কালচারাল রিলেশন সেন্টার (আইসিসিআর) আয়োজিত দিল্লী ইন্টারন্যাশনাল আর্ট ফেস্টিভ্যাল (২৭ অক্টোবর,১২-১০ নভেম্বর,২০১২) শ্রী রাম সেন্টারে ০৮/১১/২০১২ ইং তারিখে ‘মুচির আশ্চর্য বৌ’ নাটক মঞ্চায়ন করে। এছাড়া ভারতের উড়িষ্যাতে ইন্ডিয়া থিয়েটার অলিম্পিয়ার কর্তৃক ইন্টারন্যাশনাল এক্সেলেন্সি এওয়ার্ড,২০১০ ও ২০১১ অর্জন করে।

শিশুদেও মানসিক উৎকর্ষতা বৃদ্ধিতে সঞ্চালক বেশ কয়েকটি শিশু নাটক মঞ্চে এনেছে। এদের মধ্যে ‘রাজা ও মন্ত্রী (১৮/০১/২০০৯), খেলা (২৬/০৩/২০০৮), বনের রাজা (২৬/০৬/২০০৯), ভুতের নাটক (০৬/০৯/২০১০) এবং বাঘের সাধ (১৭/০৮/২০১০) মঞ্চায়ন করে। এর মধ্যে খেলা নাটকটি বাংলাদেশ টেলিভিশনের কিশোর মঞ্চে প্রচারিত হয় ১২/০৬/২০১০ তারিখে।

গ্রুপ থিয়েটার চর্চার বাইরে যে সকল নাট্যদলের নাটক মঞ্চায়নের তথ্য পাওয়া যায় তার মধ্যে উদীচী, মুন্সীগঞ্জ জেলা সংসদ ভন্ডামী (১৯৯০), বিবিসাব (১৯৯৪), মরা (১৯৯৫), আমরা এখন নরকে (১৯৯৬) , ঘাসফুল নদী চারদিকে রাজাকার (১৯৯৩), কেন এই অবক্ষয় (১৯৯৪), পাং কেরি কেচা (২০০৪), এই দিন শেষ কবে (২০০৬), ক্ষ্যাপা পাগলার প্যাচাল (১৯৯৭), পীরের তাবিজ (১৯৯৮), একটু ভাবুন (১৯৯৮), চেতনায় স্বদেশ (১৯৯৯), কি হচ্ছে (১৯৯৫) নাটক মঞ্চে আনে এবং ৬ জানুয়ারি,১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হওযার পর নবোদয় মঞ্চে আনে ‘দিন বদলের পালা’, ‘রক্তের বন্যা’, ‘কালের সন্ধ্যা’ ও ‘দুই ভাই’ নাটকটি।

এছাড়া যে সকল সংগঠন মুন্সীগঞ্জে অনিয়মিত ভাবে নাটক মঞ্চায়ন করেছিলো তাদের মধ্যে মলয় কুমার গাঙ্গুলীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা মাঠ পাড়ার সমাবেশ ক্লাব মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক নাটক মঞ্চায়ন করে। বিগত দিনে প্রমাথী, সৃজনী লেখক, বাগ প্রতিভা সংঘ, কাদামাটি সাহিত্য ও শিল্পী গোষ্ঠী,ম সেবা পরিষদ, আমরা রিকাবী বাজার থিয়েটার, ধ্রুবতারা শিল্পী গোষ্ঠী (পীরের তাবিজ,১৯৯৪) বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উৎসবসে কেন্দ্র করে নাটক মঞ্চায়ন করতো। এছাড়া কল্যাণমুখী নাট্য সংস্থা মঞ্চে এনেছে ১৯৭১ নাটকটি (২১/০২/২০১১)।

প্রাসঙ্গিক কারণে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, মুন্সীগঞ্জে যে কটি দল শিশু নাট্যচর্চা করে যাচ্ছে তাদের মধ্যে প্রভাতি খেলাঘর আসর (প্রতিষ্ঠা-১৯৭৮) এবং জাগরণ থিয়েটার অন্যতম (১০/১২/১৯৯৭ প্রতিষ্ঠা)। জাগরণ থিয়েটার ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী, মুন্সীগঞ্জ কর্তৃক শ্রেষ্ঠ দল হিসাবে পুরস্কার লাভ করে। প্রভাতি খেলা ঘর আসর ১৯৯৫, ৯৬, ৯৭ ও ৯৮ সালে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী, মুন্সীগঞ্জ জেলা কর্তৃক শ্রেষ্ঠ শিশু সংগঠনের পুরস্কার লাভ করে। দুটি দলই জাতীয় শিশু-কিশোর নাট্য উৎসবে অংশগ্রহণ করে থাকে। জাগরণ থিয়েটারের সম্পদ (২০০৯), প্রভাতি খেলাঘর আসরের হাট্টিমা ট্রিম টিম উল্লেখযোগ্য। প্রভাতি খেলাঘর এ পর্যন্ত ১৭ টি এবং জাগরণ থিয়েটার এ পর্যন্ত ১৫ টি প্রযোজনা মঞ্চে এনেছে।

এছাড়া শহরের বাইরে গজারিযায় গণছায়া, শ্রীনগরে খেলাঘর সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী ও লৌহজং-এ অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন সাম্প্রতিক সময়ে নাট্যচর্চা শুরু করেছে। সম্প্রতি গজারিয়া থিয়েটার নামে একটি নাট্য সংগঠনের তথ্য পাওয়া যায়। নাটক কবর (২০১০)।

এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, মুন্সীগঞ্জে বেশ কয়েকটি জাতীয় মানের নাট্য কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে মুন্সীগঞ্জ থিয়েটার আয়োজন করে ‘মুকাভিনয় কর্মশালা’ ও প্রযোজনা ভিত্তিক নাট্যকর্মশালা ও নাটক বিষয়ক পাঠচক্র এছাড়া পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশনের সহযোগিতায় আয়োজন করা আঞ্চলিক শিশু-কিশোর নাট্য কর্মশালা। অনিয়মিত আয়োজন করে প্রযোজনা ভিত্তিক নাট্য কর্মশালা (প্রযোজনা-সেই তমতটে এই জনপদে) এবং সঞ্চালক নাট্য চর্চা কেন্দ্র আয়োজন করে মুন্সীগঞ্জের সর্ববৃহত শিশু নাট্য কর্মশালা (১৯৯৮, অংশগ্রহণকারী ১৫০ জন)।

তথ্য সহায়িকা
১। বাংলাদেশের জাতীয় নাট্য উৎসব, কতিপয় দলিল ঃ সুকুমার বিশ্বাস, প্রকাশক-বাংলা একাডেমী
২। বাংলাদেশের নাট্যচর্চা ও নাটকের ধারা, সুকুমার বিশ্বাস, প্রকাশক-বাংলা একাডেমী
৩। অনিয়মিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী প্রকাশিত ‘সেই সমতটে, এই জনপদে’ ফোল্ডার
৪। সৌখিন নাট্যচক্রের ২২ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে প্রকাশিত ‘নতুন মানুষ’ নাটকের ফোল্ডার
৫। মুন্সীগঞ্জ থিয়েটার ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে প্রকাশিত নাট্য উৎসবের স্মরণিকা। আ.ক.ম. গিয়াস উদ্দিন, মুন্সীগঞ্জ ঃ নাট্য আন্দোলনের ভূমিকা।
৬। নাট্যপত্র, মুন্সীগঞ্জ (১-৬ সংখ্যা), সম্পাদক-আঞ্জুমান আরা।
৭। কিছু স্মৃতি কিছু কথা, অধ্যাপক জয়ন্ত কুমার সান্যাল, অমর একুশে নাট্য উৎসব, জেলা শিল্পকলা একাডেমী, মুন্সীগঞ্জ
৮। জনাব মো: দেলোয়ার হোসেন, প্রবীন অভিনেতা, সৌখিন নাট্যগোষ্ঠী, মুন্সীগঞ্জ।

পুণশ্চ: উপরের লেখার বাইরে কারো কাছে যদি কোন তথ্য থেকে থাকে সেটি জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো। যা পরবর্তীতে সংযোজন করা হবে।

আলমগীর মাহমুদ
সভাপতি, সঞ্চালক নাট্যচর্চা কেন্দ্র
মুন্সীগঞ্জ।
ই-মেইল: amahmud04@yahoo.com

2 Responses

Write a Comment»
  1. Thank you for your comment. I will try to correction my writeup.Please send more information my email amahmud04@yahoo.com

    Thank You
    Alamgir Mahmud

  2. মুনশিগঞ্জ জেলা নাটকের ক্ষেত্রে যে ভুমিকা ছিল বিশেষ করে ১৯৫০/৬০/৭০ দশকে
    সেখানে বলা চলে মিরকাদিম অনন্য ভমিকা পালন করেছে । দুঃখ জনক হলেও সত্যি মাহামুদ এর মুনশিগঞ্জের নাট্য চর্চা লেখাটিতে তার ছায়া মাত্র প্রকাশ পায়নি। আর দুঃখ জনক হল লেখাটি মিরকাদিম এর কৃতি সন্তান তৈয়ব এর পেজ এ প্রকাশ পেয়েছে ।
    বলা চলে৫০ দশক ছিল মুনশিগঞ্জের নাট্য জগতের তীর্থ মিরকাদিম কমলাঘাট হরি সভা, টুকানি পালের বাড়ি আটচালাতে নিয়মিত পালা গান নাটক হতো, বিনয় বাবু- রমেশ বাবু -জিতেন্দ বাবুরা নাটক এর নির্দেশক ছিলেন – টিপু সুলতান – নবাব সিরাজদোল্লা, রুস্তম সরহাব , এই সব ঐতিহাসিক নাটক বেশি মঞ্চায়ন হতো, ৬০ দশকে গ্রিন ওয়েল ক্লাব থেকে বোকা মানুষ, পদ্মা পারের মেয়ে, সামনের পৃথিবী, দায়ী কে? নাটক খুবই জনপ্রিয়তা পেয়েছিল , ৭০ দশক এ ভাস্কর , কাদা মাটি থেকে নিয়মিত নাটক মঞ্চায়ন হতো – ভাস্করের নাটক মহকুমা প্রশাসক কর্তৃক পুরুস্কার পেয়েছিল। ভাস্কর নিজস্ব পাণ্ডুলিপি তৈরি করে নাটক করতো- ১৯৭২ সালে পন্দিতের পাঠসালা, শিশিরের কান্না,১৯৭৩ সালে মিথ্যে শহীদ মিনার ,১৯৭৪ সালে ফাঁসির দড়ি জুলছে, ১৯৭৮ সালে ওরা বাঁচতে চায় ১৯৮০ সালে রক্ত গোলাপ ১৯৮২ সালে সাগর ছেঁচা মানিক -১৯৮৬ সালে বস্তিবাসী ভাস্করে জনপ্রিয় নাটক ছারাও আর একাধিক নাটক এর প্রায় ৩০ টি মঞ্চায়ন হয়েছে ।
    ভাস্কর এর সাথে ততঃ সময় ঘাস ফুল নদি- অনিয়মিত নাট্য গোষ্ঠী নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। মোতাহার, মিজান, গিয়াসরা আমাদের পাশে ছিল ।ভাস্কর, নবোদয়, শখিন নাট্য গোষ্ঠী এখনও নাট্য চর্চায় লিপ্ত আছে । এখনও খোলা মাঠে মঞ্চ তৈরি করে নাটককে ধরে,রেখেছে। শুধু এইটুকু বলতে চাই জেলার কোন বিষয় লিখতে হলে শহর কেন্দ্রিক হলে আন্যান্যদের প্রতি অবিচার করা হয়- সত্যিকার লক্ষ্য অর্জিত হয়না, পরিশেষে বলবো লেখাটি অসুম্পন্ন – শহর কেন্দ্রিক – তথ্যমূলক নয়। এই ধরনের লেখার বিষয় লেখক আর যত্নবান হলে খুশি হবো । কামাল আহামেদ।সম্পাদক – চেতনায় একাত্তর

Leave a Reply