শ্রীনগরে সাব রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

শ্রীনগর থেকে গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়া একটি মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানির বিতর্কিত জমি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সাব রেজিস্ট্রার রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ওই কোম্পানির ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা শ্রীনগর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার আ. খালেকের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে শ্রীনগর থানার এসআই নাজমুল অভিযোগটি তদন্তের জন্য সাব রেজিস্ট্রারের খাস কামড়ায় উপস্থিত হলে তার সাথে ক্ষতিগ্রস্ত ২০/২৫ জন গ্রাহক সেখানে হাজির হন। এ সময় তারা সার রেজিস্ট্রারকে রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকা পালন করেছেন বলে মন্তব্য করেন এবং বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। ক্ষতিগ্রস্তদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে গোপনে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিতর্কিত জমিটি রেজিস্ট্রি করেছেন বলে তারা অভিযোগ করেন।

ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, ২০১৩ সালে এমওয়ে কর্পোরেশন ও হারবাল লিঃ কোম্পানি ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পাশে উমপাড়া এলাকায় নিজস্ব জমির উভর তিনতলা ভবনে চটকদার অফিস স্থাপন করে স্থানীয় গ্রাহকদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এর পর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা তাদের টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় ওই সম্পত্তি আটক করে। দু-এক বছর পর গোপনে কোম্পানিটির কর্তা ব্যাক্তিরা জমিটি বিক্রি করে বেশ কয়েকবার রেজিস্ট্রি করতে এসে গ্রাহকদের বাঁধার মুখে ব্যর্থ হয়। প্রায় ৩ মাস পূর্বে সাব রেজিষ্টার আঃ খালেক শ্রীনগরে সাব রেজিস্ট্রার হিসাবে যোগদান করলে চক্রটি পুনরায় তৎপর হয়।

গত ১৫ জানুয়ারী এমওয়ে কর্পোরেশন ও হারবাল লিঃ কোম্পানি ওই সম্পত্তি অর্গানিক কনজ্যুমার প্রডাক্ট ও অর্গানিক কসমেটিকস এন্ড টয়লেট্রিজ কোম্পানির কাছে বিক্রি করে তা রেজিস্ট্রি করার জন্য সাব রেজিস্ট্রার অফিসে আসলে ক্ষতিগ্রস্তরা সাব রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তা রেজিস্ট্রি না করার জন্য অনুরোধ করেন এবং জানান, এই সম্পত্তি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। সাব রেজিস্ট্রার তাদের কথা দেন মামলা চলমান অবস্থায় কোন মতেই এই জমি রেজিস্ট্রি হবেনা।

কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তরা অপর একটি সূত্রে খবর পান গত সোমবার জমিটি রেজিস্ট্রি হওয়ার কথা রয়েছে। তারা সাব রেজিস্ট্রারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ছুটি নিয়ে ঢাকার বাসায় অবস্থান করছেন বলে জানান। কিন্তু তিনি ঢাকায় বসে গোপনে আতাত করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে হঠাৎ করে শ্রীনগর সাব রেজিস্ট্রার অফিসে এসে ওই সম্পত্তির দলিল সম্পাদন করে দিয়ে ফের ঢাকায় চলে যান। বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক আঃ সাত্তার শ্রীনগর থানায় সাব রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অপর একটি সূত্র জানায়, আঃ খালেক শ্রীনগরে সাব রেজিস্ট্রার হিসাবে যোগ দিয়েই বিভিন্ন হাউজিং কোম্পানির দালাল ও ভূমি দস্যুদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে। তার বিরুদ্ধে নানা রকম অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ দলিল সম্পাদনের অভিযোগ রয়েছে। বেশ কয়েকজন দলিল লেখক অভিযোগ করেন, দলিল সম্পাদনের জন্য খাজনা রশিদ, দলিলের শতকরা হার, হেবা ঘোষণাসহ নানা রকম নিজস্ব খাত তৈরি করে অবৈধ ভাবে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। তাছাড়া তার দাবি পূরণ না হলে কোন দলিল রেজিস্ট্রি করেন না।

এব্যাপারে সাব রেজিস্ট্রার আঃ খালেক তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, দলিলটি সম্পাদনের জন্য চাপ ছিল।

অভিযোগটির তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্রীনগর থানার এসআই নাজমুল জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

নিউজজি/

Leave a Reply