মুন্সীগঞ্জে ট্রলার চালক আবু তালেবকে হত্যার দায়ে আনিছ নামে এক আসামির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় অপর আসামি সেলিম মিয়াকে পেনাল কোডের ভিন্ন ধারায় ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

সোমবার বিকেল ৩টার দিকে মুন্সীগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক ড. মো. আলমগীর এ রায় দেন। এ সময় অপর আরো ৬ জন আসামিকে মামলার দায় থেকে খালাস দেওয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. হাছান ছারওয়াদী। সাজাপ্রাপ্ত আসামি আনিছ নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার চর কিশোরগঞ্জ গ্রামের হাসমত আলী বেপারীর ছেলে ও আসামি সেলিম মিয়া কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার চিৎকার গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে। রায় প্রচারের সময় আসামিরা পলাতক ছিলেন।

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, গজারিয়া উপজেলার গুচ্ছ গ্রামের আবু তালেব ইঞ্জিনচালিত ট্রলার চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। ঘটনার আগে থেকে অভিযুক্ত আনিছ আবু তালেবকে বিভিন্ন জায়গায় মালামাল নিতে বলতেন। আবু তালেব আনিছের কথায় কোথাও যেতে চাইতেন না। গত ২০০৮ সালের ১৬ জুন সকাল ৮টায় আনিছ আবু তালেবের বাড়ি এসে সিমেন্টের ক্ষেপ আছে বলে চলে যায়। পরে দুপুর ২টায় আনিছ আবু তালেবকে ট্রলার নিয়ে মেঘনা নদীতে যেতে বললে আবু তালেব ট্রলার নিয়ে মেঘনা নদীতে যায়। পরে আবু তালেব বাড়িতে ফেরত না আসায় বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে আনিছসহ অজ্ঞাত নামা আরো ৪-৫ জন আসামি শ্রেণীভুক্ত করে গত ২০০৮ সালের ২০ জুন গজারিয়া থানায় আবু তালেবের স্ত্রী আয়েশা বাদী হয়ে অপহরণের মামলা করেন। পরে আবু তালেবের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় পুলিশ আনিছকে গ্রেফতার করলে আনিছ আদালতে ঘটনার বিষয়ে ও জড়িত থাকা আসামিদের নামসহ স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেন। আসামি আনিছের দেওয়া তথ্যমতে পুলিশ আসামি সেলিমকে গ্রেফতার করলে সেলিম আদালতে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ১৬ বছরে মামলায় ৯ জন সাক্ষীর জেরা ও জবানবন্দির ভিত্তিতে আদালত আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করে এ রায় দেন।

রাষ্ট্র পক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আরিফ হোসেন বলেন, ২০০৮ সালের ১৬ জুন গজারিয়ার গুচ্ছগ্রামের ট্রলার চালক আবু তালেবকে অপহরণ করে হত্যার দায়ে আসামি আনিছকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও অপর আসামি সেলিম মিয়াকে ভিন্ন ধারায় ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। বিচারকের রায়ে আমরা রাষ্ট্র পক্ষ সন্তুষ্ট।

ডেইলি-বাংলাদেশ