পুলিশের সেল্টারে গজারিয়ায় মাদকের রমরমা ব্যবসা

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়া হয়ে প্রতি মাসে কয়েক কোটি টাকার মাদকসহ বিভিন্ন পণ্য পাচার হচ্ছে ঢাকাসহ সারা দেশে। এছাড়া গজারিয়ায় ১৫টি স্পটে রীতিমত বসে মাদকের হাট। থানা ও ফাঁড়ি পুলিশের ছত্রছায়ায় গজারিয়ার ৩০/৩৫ জন মাদক ব্যবসায়ী এ অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের টোকেন বা মাসিক চুক্তিতে এ চোরাকারবারীরা ফেনসিডিল, মদ, গাঁজা, সিগারেট, ভারতীয় শাড়ীসহ বিভিন্ন পণ্য পাচার করছে।

একাধিক সুত্র মতে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা ব্রীজ নির্মিত হওয়ার পর থেকে কোন প্রকার তল্লাশি ছাড়াই চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা থেকে যানবাহনগুলো ঢাকা পৌছে। মহাসড়কের দাউদকান্দি, গজারিয়া, সোনারগাঁওয়ের মোগরাপাড়া এলাকার পুলিশ মাঝে মধ্যে তল্লাশি চালায়। এ সব অভিযানে মালামাল উদ্ধার হলেও থানায় জমা না দিয়ে পুলিশ আত্মসাৎ করে বলে অভিযোগ রয়েছে। মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত কয়েকজনের সথে আলাপকালে জানা যায়, গজারিয়ার ভবেরচর ফাঁড়ি পুলিশের সার্জেন্ট আঃ সালাম, এসআই শ্যামল ও এএসআই বিল্লালের টোকেন ও মাসিক চুক্তিতে ১৫/১৬ জন চোরাকারবারী মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে থানা পুলিশও পিছিয়ে নেই। থানার পুরনো দু’জন এসআই’র ছত্রছায়ায় গজারিয়া থানার একজন ইউপি চেয়ারম্যানসহ বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী এ ব্যবসা করে যাচ্ছে।

এছাড়া ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের রাতে ভবেরচর ফাঁড়ি পুলিশ ও থানা পুলিশ টহলরত অবস্থায় গাড়ী চেকিং এর নামে হয়রাণী করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া তল্লাশির সময়ে যে সব অবৈধ মালামাল আটক হয় তা সংশ্লিষ্ট থানায় জমা না দিয়ে পুলিশ আত্মসাৎ করে। জানা গেছে, গত ৩ জানুয়ারী একটি মসলার গাড়ী আটক করে এস আই সাত্তার। পরে সোর্সের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে রফাদফা হলে তা ছেড়ে দেয়া হয়। গত ১২ সেপ্টেম্বর রাতে ফাঁড়ির সার্জেন্ট আঃ সালাম প্রাইভেট কার ঢাকা- মেট্রো-ব-১৪-৩২০ আটক করে তল্লাশি চালিয়ে ১ হাজার ৭০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে। তা থানায় জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করে ফেলে। ১৮ সেপ্টেম্বর রাত ১০টায় মসলার ট্রাক ঢাকা- মেট্টো-৪২৭ আটক করে।

পরে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হয়। ২১/০৯/০৮ তারিখে এ এস আই বিল্লাল একটি কভার্ড ভ্যান আটক করেন, যাতে ২ হাজার বোতল ফেনসিডিল ও ভারতীয় শাড়ী ছিল। সার্জেন্ট সালাম ও এ এস আই বিল্লাল তা সোর্সের মাধ্যমে বিক্রি করে দেন। ১৩ মার্চ এ এস আই বিল্লাল হলুদ ট্যাক্সি ক্যাব জামালদি বাসস্ট্যান্ড থেকে আটক করে ৫শ বোতল ফেনসিডিলসহ, যা থানায় জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন। গজারিয়ায় পুলিশের ছত্রছায়ায় বসে মাদকের হাট। যে সব স্পটগুলোয় মাদক বেঁচা কেনা হয় তা হলো- জামালদি বাস ষ্ট্যান্ড, হোসেন্দি বাজার, ভলাকি গ্রাম, ইসমানির চর নৌঘাট, আনারপুর বাসস্ট্যান্ড, ভাটেরচর ব্রিক ফিল্ড, তেতুইতলা মেঘনা ঘাট, বাউশিয়া ঘাট, বাউশিয়া পাখি পয়েন্ট, লক্ষীপুর ব্রীজ, লক্ষীপুর গ্রাম, ভয়েবরচর বাসস্ট্যান্ড, ফাঁড়ি সংলগ্ন, ভবেরচর বাজার, বাউশিয়া নয়াকান্দি। মাদকের ব্যবসা গজারিয়ায় যেভাবে ছোবল মেরেছে তা ভয়াবহ। গজারিয়াবাসীর দাবী এ ব্যবসার সাথে যারা জড়িত তাদের ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

[ad#co-1]

Leave a Reply