সহস্রাধিক লোক গ্রামছাড়া
মুন্সীগঞ্জের চরাঞ্চলের মোল্লাকান্দি ইউনিয়নে বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থীর হামলার ভয়ে মঙ্গলবার রাত থেকে পরাজিত প্রার্থীর সহস্রাধিক সমর্থক গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে। এছাড়া মঙ্গলবার রাত থেকে আজ বুধবার বিকেল পর্যন্ত মোল্লাকান্দির বিভিন্ন গ্রামে ৩ শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে আওয়ামী লীগ সমর্থিত বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী রিপন পাটোয়ারির সমর্থকদের হামলায় পরাজিত প্রার্থীর সমর্থক অন্ত:স্বত্ত্বা মহিলাসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৬ জনকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে র্যাব ও পুলিশ মোতায়েন থাকলেও ককটেল বিস্ফোরণ ও বিচ্ছিন্ন হামলা অব্যাহত রয়েছে। বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী তার সমর্থকদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম পরিদর্শনকালে স্থানীয় গ্রামবাসী জানায়, মঙ্গলবার রাতে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরই আওয়ামী লীগ সমর্থিত পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহআলম মলি্লকের কমপক্ষে ৮ শতাধিক সমর্থক হামলা ও নির্যাতনের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এছাড়া ২ শতাধিক সমর্থককে বিজয়ী প্রার্থী রিপন পাটোয়ারীর সমর্থকরা হামলা চালিয়ে গ্রাম থেকে বিতাড়িত করে দিয়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাতভর দেড় শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকরা আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে আনন্দ উল্লাস করে। আজ বুধবার সকালেও মহেশপুর গ্রামে শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকরা। এ সময় তারা পরাজিত প্রার্থী শাহআলমের সমর্থকদের অন্তত ২০টি বাড়িঘরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় অন্ত:সত্ত্বা মহিলাসহ ৬ জনকে মারধর করা হয়। আহত হন পরাজিত প্রার্থী শাহআলম নিজেও। তিনি জানান, বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকরা হামলা চালিয়ে তার ভাই শাহজাহান ও তাকে ছুরি দিয়ে জখম করেছে। এ সময় তার ভাইয়ের ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মাসুমা খাতুন স্বামীকে বাঁচাতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়।
তবে বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থক জামাল সরকার জানান, পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের ৮টি বালতি ভর্তি প্রায় ১শ ককটেল কুড়িয়ে পাওয়ার পর এলাকার যুবকরা নিরাপদ স্থানে নিয়ে তার বিস্ফোরণ ঘটায়।
অন্যদিকে ইউনিয়নের চরডুমুরিয়া, রাজারচর, মাকহাটি ও মুন্সীকান্দি গ্রামেও বিচ্ছিন্ন হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে সাবেক মেম্বার কামাল কাজীসহ ১০ জন আহত হয়েছে। এছাড়া সরেজমিনে বিভিন্ন গ্রাম পরিদর্শনকালে র্যাব ও পুলিশের উপস্থিতিতে বিচ্ছিন্নভাবে ককটেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে।
সদর থানার ওসি শহীদুল ইসলাম জানান, পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকরা স্বেচ্ছায় গ্রাম ছেড়ে চলে গেছে। তবে এরমধ্যে কিছু রয়েছে বিভিন্ন মামলার আসামি। বিচ্ছিন্নভাবে ছোটখাটো হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটলেও সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে তিনি জানান।
Leave a Reply