আগামী ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা ততই জমে উঠছে। তবে সুষ্ঠ ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠান হওয়া নিয়ে অনেক প্রার্থী আশংকা প্রকাশ করেছে। এলাকায় সন্ত্রাস-মাদকমুক্ত করাসহ উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রার্থীরা। ভোটের জন্য প্রার্থীরা ভোটারদের দুয়ারে-দুয়ারে ঘুরছেন। দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রার্থীরা। প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে গেছে হাট-বাজারসহ সব নির্বাচনী এলাকা। চলছে মাইকিং, পথসভা ও নির্বাচনী মিছিল।
চেয়ারম্যান পদে আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী আমিরুল ইসলাম (মোটর সাইকেল), বিদ্রোহী (আ’লীগ) প্রার্থী রেফায়েত উল্লাহ খান তোতা (দোয়াত-কলম) ও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল মান্নান দেওয়ান মনা (ঘোড়া) এর মধ্যে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
রিটার্নিং অফিস সূত্রে জানা গেছে, গজারিয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ৩ জন করে মোট ১২ জন প্রার্থী নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন। এই উপজেলায় মোট ৪৫ কেন্দ্রের মধ্যে ২৭ টি কেন্দ্র ঝুকিপূর্ণ বলে পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে। তবে নিরাপত্তার জন্য সকল প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ১ লক্ষ ৬ হাজার ২২৬ জন, পুরুষ ভোটার ৫৩ হাজার ৬৭ ও মহিলা ভোটার ৫৩ হাজার ৫৯ জন।
চেয়ারম্যান পদে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মনোনীত ও বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় নির্বাচন হাড্ডাহাড্ডি হবে বলে অনেকেই মনে করছেন। ৬ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী আমিরুল ইসলাম (মোটর সাইকেল) বিদ্রোহী প্রার্থী-(আ’লীগ), রেফায়েত উল্লাহ খান তোতা (দোয়ত-কলম) ও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল মান্নান দেওয়ান মনা (ঘোড়া) এর মধ্যে জোরদার লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যান্য চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা হলেন বিএনপি মনোনীত মুজিবুর রহমান (আনারস), জাতীয় পার্টির মনোনীত কলিমউল্লাহ (কাপ-পিরিচ) ও স্বতন্ত্র মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহ (টেলিফোন)।
পারিবারিক বিরোধের জের ধরে মূলত মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহ তার চাচাত ভাই রেফায়েত উল্লাহ খান তোতার বিরুদ্ধে নির্বাচনের মঠে নেমেছেন। উপজেলা যুবদলের সভাপতি আব্দুল মান্নান দেওয়ান মনা চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হাই তাকে বহিস্কারের ঘোষণা দেন। এতে মনা জেলা বিএনপির সভাপতির বিরুদ্ধে গত ১১ মার্চ গজারিয়া থানায় সাধারণ ডাইরি ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
এদিকে, ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হলেন ইসহাক আলী (চশমা) এবং বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী আসাদুজ্জামান (তালা) এবং আ’লীগের মনোনীত একক প্রার্থী মোস্তফা সারোয়ার বিপ্লব (উরোজাহাজ)। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা হলেন অধ্যাপিকা ফরিদা ইয়াসমিন (কলস), সুরাইয়া সরকার (ফুটবল) ও মুক্তা বেগম (সেলাই মেশিন)। ভাইস চেয়ারম্যান পদে ইসহাক আলী (চশমা) ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে অধ্যাপিকা ফরিদা ইয়াসমিন (কলস) এর জয়ের সম্ভাবনা বেশি।
২৭ টি কেন্দ্র ঝুকিপূর্ন কথাটির সত্যতা নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন-অর-রশিদ জানান, ৪৫ কেন্দ্রর মধ্যে ২৭ কেন্দ্র ঝুকিপূর্ণ, তবে এর মধ্যে ১৪টি কেন্দ্র বেশি ঝুকিপূর্ণ। প্রতিটি কেন্দ্র পুলিশ ও আনসার সার্বক্ষনিক মোতায়েন থাকবে। এছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনী। গজারিয়া উপজেলা নদীবেষ্টিত এলাকা বলে কোস্টগার্ড ও নৌপুলিশের টহল থাকবে। থাকবে ভ্রাম্যমান আদালত। ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে।
এবিনিউজ
Leave a Reply