মুন্সীগঞ্জের সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকার বিভিন্ন স্থানে তিতাসের গ্যাসের লাইনে লিকেজ থাকায় আতঙ্কের মধ্যে থাকেন বাসিন্দারা। বৃষ্টি হলেই শহরের মানিকপুর, দোওভোগ, পুরোনে বাসস্ট্যান্ড, ইদ্রাকপুর, মধ্যে কোটগাওঁ, পঞ্চসার, নতুনগাঁও, নয়াগাঁও হাতিমারাসহ কয়েকটি এলাকায় দেখা যায় গ্যাসের বুদবুদ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, মাসের পর মাস গ্যাস লিকেজ থাকলেও এ বিষয়ে উদাসীন তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সড়কের নিচ দিয়ে যাওয়া তিতাস গ্যাসের সংযোগ লাইন ফুটো হয়ে যাওয়ায় এলাকায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গ্যাস লিকেজের কয়েটি জায়গায় কেউ কেউ আগুন ও পানি দিয়ে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এছাড়াও শহরের মানিকপুর এলাকা থেকে সুপার মার্কেট পর্যন্ত সঞ্চালন পাইপ লাইনের অসংখ্য স্থানে লিকেজ থেকে গ্যাসের উদগীরণ হচ্ছে। এতে সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়ে কার্পেটিং উঠে গেছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন এই সড়কে চলাচলরত সব শ্রেণি-পেশার মানুষজন।

সোমবার (২১ আগস্ট) শহরের দেওভোগ এলাকার বাসিন্দা মালেকুন মাকসুদ বিপুল বলেন, সম্প্রতি দেওভোগ বাজার সংলগ্ন রাস্তায় গ্যাস লিকেজ হয়েছে। কে বা কারা যেনো সেই লিকেজে আগুন ধরিয়ে দেয়। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে দফায় দফায় কল দিলেও তারা ফোন ধরেনি। পরে ৯৯৯ এ ফোন করলে ফয়ার সার্ভিসের টিম এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। যে কোন সময় এসব লিকেজ থেকে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভবনা রয়েছে।

মানিকপুর এলাকার বাসিন্দা মো. রোবেল বলেন, আমার দোকান থেকে শুরু করে সামনের একাধিক স্থানে দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস লিকেজ হয়ে আছে। বৃষ্টি এলেই বোঝা যায় কি ভয়াবহ অবস্থা। এই গ্যাসের কারণে এই রাস্তাটিও নষ্ট হয়ে গেলো।

আব্দুর নুর তুষার নামের একজন রাত ৯টায় তার নিজের ফেসবুক পোষ্টে জানান, পূর্ব দেওভোগ বাজার এর সাথের মূল সড়কের নিচে গ্যাস লিকেজ হচ্ছে অনেক দিন ধরে। দিন দিন এই লিকেজ এর অবস্থা খারাপ হচ্ছে। তিতাস গ্যাস কতৃপক্ষকে বেশ কয়েকবার অভিযোগ করার পরও তাদের থেকে কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। এব্যাপারে সবার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

মুন্সীগঞ্জ নাগরিক সমন্বয় পরিষদের আহবায়ক অ্যাডভোকেট সুজন হায়দার জনি বলেন, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি একটি উদাসীন প্রতিষ্ঠান। তাদের উদাসীনতার কাছে জিম্মি নাগরিকরা। তিতাস শুধু ইস্ট কোম্পানির মতো গ্রাহক থেকে টাকা আদায় করে। গ্রাহক সেবা নিয়ে তাদের মাথা ব্যথা নেই। তিতাসের ত্রুটিপূর্ণ সঞ্চালন লাইনের কারণে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার প্রবেশ পথের সড়কের যে ক্ষতি হয়েছে, সেই ক্ষতিপূরণের জন্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করি। গ্যাস লিকেজ থেকে বড় দুর্ঘটনা হলে সেই দায় তিতাস কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে।

তিতাস গ্যাসের মুন্সীগঞ্জ কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মেছবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গত ৩ দিন ধরে আমরা হাতিমারা এলাকায় গ্যাস লিকেজের কাজ করছি। পর্যায়ক্রমে সব জায়গায় গ্যাস পাইপ লিকেজের কাজ করবো। এর আগেও বিভিন্ন জায়গায় এ ধরনের সমস্যার সমাধান করেছি। রাস্তার এই গ্যাস লিকেজ থেকে বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভবনা নেই।

রাইজিংবিডি