বাঘরায় ৮ মাসে ৪ খুন এক ডজন সংঘর্ষ

খুন, ডাকাতি ও সংঘর্ষের ঘটনায় শ্রীনগর উপজেলার সন্ত্রাসকবলিত জনপদ বাঘরা আবারও অশান্ত হয়ে উঠেছে। ৮ মাসে বাঘরা ইউনিয়নে ৪টি খুন, দুটি দুর্ধর্ষ ডাকাতি ও এক ডজন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। চলছে নীরব চাঁদাবাজি। বাঘরা দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে পৃথক সাতটি সন্ত্রাসী বাহিনী। পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের মদদে এখানে চলছে সন্ত্রাসের লালন-পালন। শ্রীনগর থানার ওসির বিরুদ্ধে রয়েছে সন্ত্রাসী বাহিনী মদদের অভিযোগ। বিএনপির নেতাকর্মী বা সমর্থক হলে মামলা নিতে অকপটে অপারগতা জানায় শ্রীনগর থানা পুলিশ। বাঘরা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের সঙ্গে ওসির বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠলে সেখানে চেয়ারম্যানের সমর্থিত একটি সন্ত্রাসী বাহিনী বীরদর্পে চালাচ্ছে অস্ত্রের ঝনঝনানি।

বাঘরা ইউনিয়নের গ্রামগুলো ঘুরে দেখা গেছে, সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে জিম্মি সন্ত্রাসকবলিত বাঘরার নিরীহ জনসাধারণ। প্রত্যেক বাহিনীকেই চাঁদা দিতে হয় তাদের। এ অঞ্চলের সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পুলিশেরও সখ্য রয়েছে। জনসাধারণকে জিম্মি করে এ অঞ্চলে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বাঘরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের সমর্থিত শাহীন গ্রুপ, নুরুল হক গ্রুপ, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা পিন্টু গ্রুপ, বাঘরা বিএনপির সভাপতি শামসু খাঁর সমর্থিত তাজেল গ্রুপ, রউফ ওরফে রবা ডাকাতের গ্রুপ, সাদ্দাম গ্রুপ ও মামুন গ্রুপ। এ সাতটি সন্ত্রাসী বাহিনী সম্প্রতি চাঁদাবাজি, ডাকাতি ও খুনের উৎসবে মেতে উঠেছে।

আট মাসে বাঘরায় শাহীন গ্রুপের হাতে খুন হয়েছে স্কুলছাত্রী মৌসুমী। এ ছাড়া ওরশেদ আলী হত্যা, মামুন গ্রুপের হাতে সংঘটিত আনসার হত্যা ও তাজেল গ্রুপের গুলিতে বাঘরা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী জাহাঙ্গীর খুনের ঘটনায় বাঘরা অশান্ত হয়ে ওঠে।

গত ১৩ জুলাই রাতে বাঘরা বাজারে সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সেখানে পাঁচটি জুয়েলারিসহ পৃথক সাতটি দোকান থেকে দেড়শ’ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ৭০০ ভরি রুপার অলঙ্কার ও সাড়ে ৫ লাখ টাকা লুটে নেয় ডাকাত দল।

এদিকে ১৬ আগস্ট রাত ২টার দিকে ইউনিয়নের রুদ্রপাড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী সামাদ সিকদারের বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। এ সময় সন্ত্রাসীরা প্রবাসীর স্ত্রী সাবিনাকে গুলি করে গুরুতর আহত করে। এ ব্যাপারে শ্রীনগর থানায় মামলা হয়েছে। আসামিরা এলাকায় দাপটের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এ ঘটনার একদিন পরই নুরুল হক বাহিনী হানা দেয় বাঘরা বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি তাজুল মাদবরের বাড়িতে। তিনি বিএনপি নেতা বলে শ্রীনগর থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান থানায় কোনো মামলা নেননি। এ প্রসঙ্গে থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান দাবি করেন, বাঘরা এখন শান্ত। ইতিমধ্যে সেখানকার ত্রাস তাজেল গ্রুপের প্রধান তাজেল, সোহরাব, মিজানুর, বাবু ও আছানুরকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

সমকাল

Leave a Reply