শিলা বৃষ্টিতে বাঙ্গিতে কোটি টাকার ক্ষতি

মধ্য রাতের কালবৈশাখী ও শিলা বৃষ্টিতে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার খাসকান্দি ও রমজানবেগ এলাকার বাঙ্গি চাষিদের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। মাত্র আধাঘণ্টার এ বৃষ্টিতে বাঙ্গিতে কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন কৃষক।

গত রোববার রাত ১২টার দিকে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী বয়ে যায়। কালবৈশাখীর সঙ্গে শিলা বৃষ্টি হয় রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। ওই শিলার আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়েছে পৌরসভার খাসকান্দি ও রমজানবেগ এলাকায় আবাদ করা বাঙ্গি।

গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে খাসকান্দি ও রমজানবেগ এলাকা ঘুরে জমিতে বাঙ্গির ব্যাপক ক্ষতির চিত্র দেখা গেছে। এ সময় কৃষকদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানিয়েছেন, ওই দুই এলাকার প্রায় ৮০ জন কৃষক বাঙ্গি আবাদ করেছেন। সপ্তাহখানেক পরই আবাদ করা বাঙ্গি উত্তোলন করে বাজারে বিক্রি করতেন। এতে লাভের স্বপ্ন দেখছিলেন। কিন্তু মধ্য রাতের শিলা বৃষ্টিতে তাদের সেই স্বপ্ন ভেঙে গেছে। শিলার আঘাতে জমিজুড়ে বাঙ্গি তছনছ হয়ে গেছে। এতে একেকজন চাষির এক থেকে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত ক্ষতি হয়েছে।

রমজানবেগ এলাকার কৃষক আবদুল আজিজ ভূঁইয়া (৬৫) বলেন, তিনি ৬০ শতাংশ জমিতে বাঙ্গি বুনেছেন। সাত দিন পরই বাঙ্গি উঠাতেন। এ বাঙ্গি বাজারে ৩-৪ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারতেন। কিন্তু শিলা বৃষ্টিতে তাঁর সব বাঙ্গি তছনছ হয়ে গেছে।

একই এলাকার কৃষক কাদির আলী (৬০) বলেন, ‘শিলা পইড়্যা আমার ক্ষেতের সব বাঙ্গি শেষ হইয়া গেছে। ৬০ শতাংশ জমিতে বাঙ্গি করছি। ২ লাখ টাকা বেচতে পারতাম।’

সম্প্রতি মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরেন খাসকান্দি এলাকার ওমর আলী (৪০)। তিনি জানান, দেশে ফিরেই নিজের বাপদাদার জমিতে বাঙ্গি আবাদ করেন। এতে খরচ হয়েছে ২ লাখ টাকা। ৭-৮ দিন পরই জমি থেকে বাঙ্গি তুলে বাজারে নিয়ে যেতেন। তিনি বলেন, বাঙ্গিতে লাভের আশায় বুক বেঁধেছিলাম। কিন্তু শিলায় সেই আশার গুড়েবালি। শিলার আঘাতে জমির সব বাঙ্গিই নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আর এক টাকারও বাঙ্গি বেচতে পারবেন না বলে জানান তিনি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, কালবৈশাখী ও শিলা বৃষ্টিতে জেলায় ৩০ হেক্টরের বেশি জমির ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হেক্টর জমির শাকসবজির ক্ষতি হয়। এ ছাড়া ৫ হেক্টর জমির বাঙ্গির ক্ষতি হয়।

সমকাল

Leave a Reply